দুইজন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন।
বগুড়ায় নিহত ২
বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘সর্বাত্মক অসহযোগ’ কর্মসূচি ঘিরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় সংঘর্ষে দুজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
আন্দোলনকারীরা বগুড়া টি অ্যান্ড টি অফিস, আওয়ামী লীগ, ছাত্র ইউনিয়ন ও জাসদ অফিস, টাউন ক্লাব, সদর ভূমি অফিস ও আওয়ামী লীগ নেতার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে আগুন লাগিয়ে দেন। পরে আন্দোলনকারী ও আওয়ামী লীগকর্মীদের উপর্যুপরি ককটেল বিস্ফোরণ এবং পুলিশের টিয়ার শেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডের শব্দে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় শহরের কেন্দ্রস্থল সাতমাথা এলাকা। এ ছাড়া বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করায় ধোঁয়াচ্ছন্ন হয়ে পড়ে পুরো শহর।
আজ রবিবার (৪ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের সাতমাথা এলাকায় সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী সাতমাথা চত্বরে অবস্থান নেন। এ সময় আন্দোলনের সমর্থকরা সাতমাথায় প্রবেশের চেষ্টা করলে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সাতমাথা চত্বর আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও পরে তা আন্দোলনকারীরা দখলে নেন।
এ সময় আওয়ামী লীগকর্মীরা ধাওয়া খেয়ে সাতমাথা ত্যাগ করেন। সাতমাথা চত্বর দখলে নেওয়ার পরপরই বিভিন্ন স্থাপনা এবং সড়কে থাকা মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ওই সময় পুলিশ সার্কিট হাউস রোডে পুলিশ প্লাজার সামনে অবস্থান নিয়েছিল। আন্দোলন সমর্থকরা সাতমাথায় অগ্নিসংযোগ শেষে পিডিবি রোড হয়ে শহীদ খোকন পার্কের ভেতরে এবং সার্কিট হাউস রোড হয়ে ফুল মার্কেটের সামনে গিয়ে পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপ শুরু করেন।
এ সয়ম পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে টিয়ার শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও রাবার বুলেট ছুড়ে আন্দোলনকারীদের হটিয়ে দেয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাতমাথা থেকে তাদের হটিয়ে দিয়ে বিভিন্ন সড়কের মুখে অবস্থান নেয়। থেমে থেমে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলতে থাকে। আন্দোলনকারীরা স্টেশন রোড, শেরপুর রোড, কবি নজরুল ইসলাম সড়ক ও গোহাইল রোড থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ তাদের নিবৃত্ত করতে ফাঁকা গুলি অব্যাহত রাখে। দুপুর পৌনে ২টার দিকে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি সদস্যরাও সাতমাথা চত্বরে অবস্থান নেন।
এদিকে কবি নজরুল ইসলাম সড়কে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষকালে গুলিবিদ্ধ একজনকে গুরুতর অবস্থায় বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। শজিমেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ বিষয়টি কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন।
একই সময় বগুড়ার দুপচাঁচিয়া থানা ও উপজেলা পরিষদে হামলা চালান আন্দোলন সমর্থকরা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বাধে। সেখানে গুলিবিদ্ধ একজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইএমও ডা. আওফী খান এই তথ্য নিশ্চিত করেন।